উদ্ঘাটন, পরিদর্শন, দলিল স্বিকার ও ফেরত – দে. কা ১২
দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮ এ একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা কিভাবে পরিচালিত হবে তা সবিস্তারে বলা আছে, কিভাবে পক্ষদের পরীক্ষা করতে পরে, উদ্ঘাটন ও পরিদর্শন করতে পারে, স্বিকারোক্তি নিতে পারে এবং প্রয়োজনে দলিল আটকে রাখতে পারে এবং ফেরত দিতে পারে। এসব বিষয়ের দেওয়ানী কার্যবিধির আদেশের অন্তগত বিধিগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ন। নিচে এমন গুরুত্বপূর্ন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হোল।
আদেশ ১০। পক্ষদের পরিক্ষাকরন
# আদালত নিজেই পক্ষদের পরীক্ষা করতে পারে।
# যদি উকিল দিয়ে মামলা রিপ্রেজেন্ট করে তবে আদালত উকিলকেই প্রশ্ন করবে। উকিল উত্তর দিতে না পারলে তখন আবার পক্ষকে ডাকবে।
আদেশ ১১। উদ্ঘাটন এবং পরিদর্শন
আর্জি এবং লিখিত জবাবের পরেও যদি গুরুত্বপূর্ন কোন বিষয় বাকি থাকে বা পক্ষগনের মধ্যে কোন বিষয় বোঝার ব্যাপার থাকে যা মোকদ্দমার এক পক্ষ আরেক পক্ষকে প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন। মামলার বিষয়ে লিখিত ভাবে প্রশ্ন করতে পারেন এবং উক্ত প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অপর পক্ষকেও লিখিত ভাবে উত্তর দিতে হয়।
প্রাসঙ্গিক;
- ক) স্বীকারোক্তি [আদেশ ১২]
- খ) দলিল দাখিল, আটক, ফেরত [আদেশ ১৩]
- গ) হলফনামা [আদেশ ১৯]
ধারা ৩০ – বিচার্য বিষয় গঠন করার পর ঘটনা উদ্ঘাটন এবং পরিদর্শন [Part of institution of suit]
আদেশ ১১।
বিধি, ১ ও ১১
- মামলার বিষয় / ইস্যু / ঘটনা সর্ম্পকে পরিষ্কার হতে
- আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বিচার্য বিষয় প্রনয়নের তারিখ হতে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে দিতে হবে।
- আদালতের কাছে দিতে হবে, বিচারক অপর পক্ষের নিকট তা পেশ করবেন।
- আদালতে ১৪ দিনের মধ্যে পশ্নগুলো যাথাযথ কিনা তা চেক করবেন এবং প্রশ্ন গুলো এপ্রুভ করবেন।
এরপর প্রশ্ন গুলো অপর পক্ষকে দেবেন যারা ১০ দিনের মধ্যে উত্তরগুলো হলফনামা সহকারে জমা দেবেন।
আদেশ ১২। স্বীকারোক্তি [Admission]
আগে একটু বুঝে নেই।
মামলার একপক্ষ, অপর পক্ষকে মামলা স্বীকার বা দলিল স্বীকার বা ঘটনা স্বীকার করার জন্য আহব্বান করতে পারে।
আদেশ ১২ অনুসারে স্বীকারোক্তি ২ প্রকার
- ১. মৌখিক
- ২. লিখিত
মোকদ্দমার কোন পক্ষ অপর পক্ষের কোন বিষয় আংশিক বা পুরোপুরি সত্য বলে স্বীকার করে নিতে পারে। আবার কোন পক্ষ অপর পক্ষকে মোকদ্দমার কোন অংশকে স্বীকার করার জন্য অপর পক্ষকে আহব্বান করতে পারে। এই আহব্বান একটি নোটিশ দিয়ে করতে হয়।
নোটিশ দেবার সময়:
কোন পক্ষ শুনানির জন্য নির্ধারন করা দিনের ৯ দিন আগে অপর পক্ষকে মোকদ্দমায় উল্লিখিত কোন তথ্য স্বীকার করার জন্য আমন্ত্রন জানাতে পারেন।
- এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আদালত রায় বা আদেশ প্রদান করতে পারে।
স্বিাকারোক্তি ৩ ভাবে হতে পারে।
- ১. প্লিডিংস এর মাধ্যমে [Pleadings] [আরজি বা লিখিত জাবাব]
- ২. নোটিশের মাধ্যমে [Notice]
- ৩. সম্মতির মাধ্যমে [Agreement]
যেই স্বীকারোক্তি যেভাবে হয়
ক. মামলায় প্লিডিংস এর মাধ্যমে এক পক্ষ অপর পক্ষের দাবি মেনে নিতে পারে [বিধি ১]
খ. দলিল স্বীকারের মাধ্যমে; স্বীকারের জন্য যখন একপক্ষ নোটিশ জারি করে তখন অপর পক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে সেই দলিলটি স্বীকার করতে হবে। [বিধি ২]
গ. ঘটনা স্বীকার : কোন পক্ষ শুনানীর জন্য নির্ধারিত দিনের পূর্বের ৯ দিনের মধ্যে যে কোন সময় মামলার ঘটনা স্বীকার করার জন্য অপর পক্ষকে লিখত নোটিশ জারি করলে, আদালত থেকে ঠিক করা সময়য়ে মধ্যে বা কোন সময় না ঠিক করা হলে ১৫ দিনের মধ্যে স্বীকার করতে হবে, অবহেলা করলে অবহেলাকারিকে মামলার খরচ প্রদান করতে হবে। [বিধি ৪]
আদেশ ১৩। দলিল দাখিল, আটক এবং ফেরত [Production, Impounding & Return of Document]
যদি আদালতের মনে হয় কোন দলিল অসঙ্গত বা অপ্রাসঙ্গিক বা অগ্রহনযোগ্য তবে উপযুক্ত কারন লিপিবদ্ধ করে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।
বিধি, ৮; দলিল আটক [Impounding]
কেন?
- ক) মামলার কোন কারনে, শর্ত সহ আটকের নির্দেশ প্রদান করবেন।
- খ) ষ্টাম্প কম দিলে।
- গ) জাল দলিল হলে।
বিধি, ৯; কখন আটক কৃত দলিল ফেরত দেওয়া হবে।
- ক) আদালতের দেওয়া শর্ত পূরণ করলে ।
- খ) যথাযথ ষ্টাম্প দেওয়ার পর।
- গ) জাল দলিল ফেরত দেওয়া হবে না । [বরং পেনাল কোডের ধারা ৪৬৩, ৪৬৪, ৪৬৫ এর অধীনে অভিযুক্ত হতে পারে]
- দেওয়ানী কার্যবিধির সকল বিষয় দেখুণ।
- বার কাউন্সিল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ঘুরে আসুন: বার কাউন্সিল পরীক্ষার প্রস্তুতি (সকল বিষয়) পাতা থেকে।
আমাদের আপডেটেড নোট, গাইড, ভিডিও টিউটোরিয়াল পেতে এবং আইন বিষয়ক বিভিন্ন ট্রেনিং, কোচিং, কোর্স কিনতে আমাদের আইন পাঠশালা ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ২০২৩ সালের বার কাউন্সিল MCQ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে আগ্রহী হলে দ্রুত আইন পাঠশালা ফেসবুক গ্রুপ এ সংযুক্ত হোন।