ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন; প্রয়োগ ও বিশ্লেষণ
আমাদের জীবন আজ তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর, আমাদের অনুমতি নিয়ে বা না নিয়ে আমাদের জীবন রেকর্ড হয়ে থাকছে এই ডিজিটাল দুনিয়ায়। কখনো কাজে বা কখনো শখে আমারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ডিজিট্যাল্লি সংরক্ষণ করছি। আমাদের কম্পিউটার, মোবাইল থেকে শুরু করে স্মার্ট ওয়াচ, টিভি, সিসিটিভি সব কিছুই এখন ডিজিটাল নেটওয়ার্কে সংযুক্ত। আর এগুলোর মাধ্যমেই আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজ কর্ম করে থাকি হোক তা অফিসের ডক ফাইল বা মেইল কিম্বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা ইউটিউবিং। বর্তমানে এই ডিজিটাল দুনিয়ায় উপর আমাদের ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল জীবন নির্ভর করে, তাই এর নিরাপত্তা ও অপব্যবহার রোধে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তার গুরুত্ব বুঝতে পেরে অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও আইন তৈরি করা হয়েছে, চলুন বাস্তব প্রয়োগ সহ আইনের প্রক্রিয়াগুলো একটু বুঝে নেই যাতে আমরা এই আইনের বিষয় বস্তু ও কারণগুলো উপলব্ধি করতে পারি, এই আইনের আলোচিত ও সমালোচিত ধারা গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি এবং প্রয়োজনে যথাযথ প্রয়োগ করতে পারি এবং এই আইনের অপব্যবহার ঠেকাতে পারি।
কেন এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার আইন প্রয়োজন?
আমরা ইতোমধ্যেই বুঝেছি যে আমরা এই ডিজিটাল জগতের উপর কতটা নির্ভরশীল। আমরা সকলে কম্পিউটার টেকনোলজি সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখি না অনেকেই এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় খুব বেশী ভাবি না। সাধারণত আমরা মনে করি আমার মোবাইল আমার একাউন্ট এখানে আমি আমার ইচ্ছেমত সব কিছু করতে পারি। কিন্তু এমন ভাবনার প্রেক্ষিতে আপনি নিজের অজান্তে অন্যের ক্ষতি করে ফেলতে পারেন বা একটি অপরাধ করে ফেলতে পারেন। আপনি যেমন ক্ষতি করতে পারেন তেমনি আপনার ক্ষতিও অন্য কেই করতে পারে।
এই বিষয়গুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করলে সহজে বোধগম্য হবে বলে মনে করি।
- সাধারণ প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে অপরাধ করা, এবং
- বিশেষ প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে অপরাধ করা।
- সাধারণ প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে অপরাধ করা;
উদাহরণ – ১
একটা উদাহরণের মাধ্যমেই শুরু করি,
ধরুন রহিম তার বন্ধু কামালের ফোন নিয়ে দেখলো সেখানে তার ফেসবুকে লগ-ইন করা আছে, সে তার বন্ধুর পারমিশন না নিয়েই ফেনটার ম্যসেন্জারে ঢুকল, ডুকে দেখলো সেখানে কামালে বান্ধবী সোনালীর কিছু ব্যক্তিগত ছবি আছে। রহিম কামালকে কিছু না জানিয়েই সেই ছবিগুলো তার মোবাইলে নিয়ে নিলো।
এদিকে কিছুদিন পরে সোনালী আর কামালে ভালোবাসার সম্পর্ক টিকলো না, এই ঘটনা জানার পর রহিম বন্ধুকে ছ্যকা দেওয়ার ক্ষোভের প্রেক্ষিতে একটি নতুন ফেইক একাউন্ট খুলে সোনালির ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিল। এর ফলে সোনালিকে গ্রামবাসী খারাপ মেয়ে হিসেবে আখ্যা দিয়ে বের করে দিল এবং সোনালি আত্মহত্যা করলো অন্যদিকে সোনালীর বান্ধবী কাকলী পুলিশকে বলল কামালে কাছে সোনালী ছবিগুলো পাঠিয়েছিল। পুলিশ কামালকে ধরে নিয়ে গেল।
লক্ষ করুন এখানে রহিম মজার ছলে তার সাধারণ জ্ঞান দিয়েই সোনালীর ছবিগুলো নিয়েছিল কিন্তু পরে সোনালীকে শিক্ষা দিতে তার ছবি ছড়ায় কিন্তু পরে বিষয়টা আর তার হাতে থাকেনি, এর ফলে একটি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং দুটি পরিবার নষ্ট হয়।
- বিশেষ প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে অপরাধ করা;
উদাহরণ – ২
এটাও একটা উদাহরণ দিয়ে সহজে বুঝাই,
মুফতা আর্কিটেক্ট পুলিশ সাব হেড কোয়াটার ডিজাইনের একটি কন্ট্রাক্ট বিড করে, একই প্রজেক্টে দেশের নামি দামি আরও প্রায় ২০ টা কোম্পানি বিড করে যার অর্থমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মুফতা আর্কিটেক্ট কোম্পানির জিএম রহমান সাহেব একটি ল্যাপটপ ব্যবহার করে যেখানে কোম্পানি সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে। রহমান সাহেব তার শখের বসে ছবি এডিট করেন তিনি একটি পাবলিক ফোরামে ফটোশপের আপডেট ভার্সনের ক্র্যাক ফাইল চাইলেন, এবং এক ফেসবুক ফ্রেন্ড তাকে একটি ফাইলটি শেয়ার করলো। কিছুদিন পর দেখা গেল যে রহমান সাহেবের গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন ফাইল দিয়ে অনেক কম দামে পুলিশের প্রজেক্টটি অন্য এক অখ্যাত কোম্পানি পেয়ে গেছে। পরে জানা গেল যে ফটোশপের ক্র্যাক ফাইলটিতে একটি ভাইরাস লুকানো ছিল যা তার মাধ্যমে অফিসের নেটওয়ার্কে ঢুকে সব তথ্য নিয়ে গেছে। এবং এটি একটি প্রসিদ্ধ হ্যাকারের কাজ।
এই দুটি উদাহরণ থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে আমারা খুব সহজেই নিজের অজান্তেই সাইবার ক্রাইমের স্বীকার হতে পারি। নিজের সামান্য অসতর্কতা বা ভুলের কারণে নিজের তথা অন্যের অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারি। আবার অনেক সতর্ক থাকার পরও অনেক সিদ্ধ হস্ত মানুষ তাদের বিশেষ জ্ঞান দিয়ে আমাদের হারিয়ে তাদের কাজ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে পারে।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এমন পরিস্থিতি যাতে না হয় তা লক্ষ রাখা এবং মানুষকে আইনের মাধ্যমে সচেতন করা ও অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখা। দেখা যায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের আগে যেসব আইন ছিল তা খুব-ই পুরনো ছিল যার ফলে সেইসব আইন দিয়ে তথ্য ও প্রযুক্তির জটিল বিষয়গুলো সরাসরি অন্যায় বলে ধরা যেত না অন্যদিকে আগের প্রক্রিয়ায় এইসব নতুন ডিজিটাল বিষয়গুলো যথাযথ ভাবে ব্যাখ্যা করা যেত না তাই সরকার বাধ্য হয়ে তার নাগরিকদের রক্ষা করতে এবং দেশের অবস্থা স্বাভাবিক রাখতে নতুন আইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ [Informaiton & Communicaiton Technology Act, 2006 (ICT)] প্রণয়ন করে কিন্তু এই আইনটি অনেক সমালোচনার মুখে পড়ায় এবং আরও কিছু জরুরী বিষয় সংযুক্ত করার প্রয়োজন হলে এই আইনের অনেকটা অংশ বাতিল করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ [Digital Security Act, 2018] প্রণয়ন করে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিছু যায়গায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের উপর নির্ভর করে যার ফলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন সম্পূর্ণ বাতিল করা হয় নি।
কখন মামলা করা যাবে?
এই উত্তর পাওয়া যাবে প্রতিটি অপরাধের ধারকে দেখলে কিন্তু সব গুলো ধারার সারমর্ম নিয়ে বলা যায়, যদি কেউ আপনার বা দেশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কম্পিউটার, মোবাইল বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল, ম্যাগনেটিক, অপটিক্যাল ডিভাইস দ্বারা বা ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ক্ষতি বা মানহানি করে বা করার চেষ্টা করে তখন তা হবে একটি অপরাধ আর তখন আপনি তার বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা করতে পারেন। [নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল]
অপরাধ ও সাজা
আইনটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় এখানে সহজ ভাষায় ও সংক্ষিপ্ত ভাবে উল্লেখ করা হোল;
ধারা ১৭, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বে-আইনি প্রবেশ, ইত্যাদির দণ্ড
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বে-আইনি প্রবেশ করে বা করার চেষ্টা করে এবং ক্ষতি করে বা করার চেষ্টা করে তবে তা হবে একটি অপরাধ।
- এই অপরাধটি প্রথমবার করল, তিনি সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে, তিনি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
[ এই আইনের প্রায় সব ধারা গুলোতেই এমন প্রথমবার ও দ্বিতীয় বারের শাস্তি আলাদা করে দেওয়া আছে যা পরবর্তী ধারা গুলো সংক্ষেপে একসাথে উল্লেখ করা হল]
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো বলতে এখনে এমন অবকাঠামোকে বুঝানো হয়েছে যেখানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ডিজিটাল তথ্য থাকবে এবং সরকার তাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো বলে ঘোষণা করবে। এটি সরকারি বা বেসরকারি দু-ই হতে পারে। যেমন ধরুন বাংলাদেশ জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেস।
ধারা ১৮, কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম, ইত্যাদিতে বে-আইনি প্রবেশ ও দণ্ড
কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম, ইত্যাদিতে বে-আইনি প্রবেশ করেন বা সাহায্য করেন তবে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে তার অনধিক ৬(ছয়) মাস থেকে অনধিক ৩ বছর বা এর দ্বিগুণ কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে সাথে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। [উদাহরণ ১ এর সাথে বিষয়টা রিলেট করতে পারেন]
উল্লেখ্য এখানে অনুমতি ছাড়া কারো কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা কোন অনলাইন একাউন্টে ঢোকা হবে বে-আইনে প্রবেশ।
ধারা ১৯, কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ইত্যাদির ক্ষতিসাধন ও দণ্ড
কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, ইত্যাদির মধ্যে বেআইনি ভাবে / অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করেন, মালিককে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করনে। ম্যলওয়ার প্রবেশ করান, তথ্য সংগ্রহ করেন। স্প্যাম করেন (এ্যডভ্যটাইজ) করেন, অযথা মেইল পাঠান, নিজের বিল অন্যের নামে প্রবেশ করান তাহলে এই ধারার অধীনে তা একটি অপরাধ হবে। এই অপরাধের ফলে তার অনধিক ৭ বছর থেকে অনধিক ১০ বছর বা এর দ্বিগুণ কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে সাথে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
উদাহরণ – ৩
অনেক সময় দেখা যায়, অনেকে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ বা ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি/ ভিডিও অন্যের কম্পিউটার সিস্টেমে ডুকে চুরি করেন এবং ব্লাকমেইল করেন বা টাকা পয়সা চান, তারা সহজেই এই ধারার অধীনে পরতে পারেন।
ধারা ২১, মুক্তিযুদ্ধ,, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিষয়ক
মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড হচ্ছে অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন এবং সর্বোচ্চ ১ থেকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
ধারা ২২ ও ২৩, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক জালিয়াতি ও প্রতারণা
ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক জালিয়াতি ও প্রতারণায় দণ্ড হচ্ছে।
এখানে বলা হয়েছে “যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে জালিয়াতি বা প্রতারণা করেন, তা হলে ঐ ব্যক্তির সেই কাজটি হবে একটি অপরাধ।”
এই অপরাধের শাস্তি হচ্ছে অনধিক ৫ বছর থেকে অনধিক ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
উদাহরণ – ৪
উল্লেখ্য বর্তমানে ফোন করে বিকাশে যে প্রতারণা করা হয় অথবা মোবাইল ফোন কোম্পানি যে কল করে ১ চাপুন ২ চাপুন বলে যে প্রতারণা করে সেগুলো এই ধরার মধ্যে সহজেই ফেলা যায়। তাছাড়া অনলাইনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেসব প্রতারণা করে যেমন, এক পন্য দেখিয়ে অন্য পন্য দেওয়া ইত্যাদিও এই ধারায় ফেলা যায়।
উল্লেখ্য, ভোক্তা অধিকার আইনের মাধ্যমেও আপনি বিচার চাইতে পারেন কিন্তু সাধারণত প্রতিষ্ঠানটি রেজিস্টার্ড না হলে বা কিছু ক্ষেত্রে তাদের এখতিয়ারে জটিলতার কারণে তারা সব বিষয় আমলে নেয় না বা নিলেও খুব একটা লাভ হয় না।
ধারা ২৪, ছদ্মবেশ ধারণ করে বা প্রতারণা
কোন ব্যক্তি যদি ডিজিটাল মাধ্যম বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, ইচ্ছে করে ছদ্মবেশ ধারণ করে বা প্রতারণা করে কারো ক্ষতি সাধন করে তবে তা একটি অপরাধ যার ফলে দণ্ড হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
উদাহরণ – ৫
তাই সাধু সাবধান যারা অন্য কারো নামে আইডি খুলে মানুষকে প্রতারণা করেন, টাকা চান বা প্রেম নিবেদন করেন তারা এই আইনে ধরা খেয়ে যেতে পারেন।
ধারা ২৮, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত
যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো তথ্য প্রকাশ, সম্প্রচার, ইত্যাদি করে তবে তা হবে একটি অপরাধ যার ফলে দণ্ড হচ্ছে ৫ বছর থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
বর্তমানে এই ধারাটির প্রয়োগ বেশ লক্ষণীয়, “ধর্মীয় মূল্যবোধ” বা “অনুভূতি”-র সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায়ন না থাকার কারণে এর মাধ্যমে সহজেই কাউকে বিপদে ফেলা সম্ভব।
ধারা ২৯; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার, ইত্যাদি;
কেউ যদি মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে তবে তবে তা হবে একটি অপরাধ। উল্লেখ্য, এখানে মানহানির সংজ্ঞায়ন দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুসারে নিরূপণ হবে।
- এই অপরাধটি প্রথমবার করল, তিনি সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে, তিনি সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ধারা ৩১; আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড
যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা ঘটিবার উপক্রম হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির সেই কাজ হবে একটি অপরাধ।
- এই অপরাধটি প্রথমবার করল, তিনি সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে, তিনি সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
এই ধারটির প্রয়োগ অনেক বিস্তারিত “শত্রুতা”, “ঘৃণা” বা “বিদ্বেষ” শব্দগুলো সহজে বোধগম্য হলেও এর মাত্রা একটি মাথা ব্যথার কারণ কারণ এটি অল্পতেই আমাদের বাক স্বাধীনতার টুটি চেপে ধরতে পারে ।
উদাহরণ – ৬
যেমন ধরুন, ক বিরোধী দলে রাজনৈতিক নেতা তিনি খর দুর্নীতির সমালোচনা করলেন এখন খ একজন সরকারী দলে নেতা হওয়ার কারণে তিনি এটাকে “বিদ্বেষ” হিসাবে আখ্যায়িত করলেন এবং পুলিশ ক’কে ধরে নিয়ে গেল। তাই এইসব বিষয়ে উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট গাইডলাইন খুব-ই প্রয়োজন।
ধারা ৩২; সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গ
সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধ ও দণ্ড; যদি কোনো ব্যক্তি Official Secrets Act, 1923 (Act No. XIX of 1923 এর আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করতে সহায়তা করেন তবে সেই অপরাধের জন্য।
- প্রথমবার, তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- তারপর করলে, তিনি যাবজ্জীবন বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
এই আইনটি প্রকাশের পর এই ধারাটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে; বিশেষত সাংবাদিক, ব্লগার এবং সুশীল সমাজ এই ধারাটি নিয়ে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন। চলুন এই ধারাটি আরও একটু বিস্তারিত বুঝে নেই।
এই ধারাটিতে Official Secrets Act, 1923 এর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে Official Secrets Act, 1923 এ যেসব অপরাধের উল্লেখ আছে সেইসব অপরাধ যদি ডিজিটাল ডিভাইস বা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করা হয় তবে সেক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে তা অপরাধ হবে এবং তার বিচার করা যাবে।
এখন প্রশ্ন হল এই Official Secrets Act, 1923 কি বলা আছে? এই আইনটি যদি খুব সংক্ষেপে বোঝার চেষ্টা তাহলে বলা যায়; যদি কোন ব্যক্তি সরকারের কোন অবকাঠামো, অফিস, অফিসিয়াল, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, ডিজাইন, তথ্য, ছবি ইত্যাদি সরকারের সরাসরি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করেন তবে তিনি Official Secrets Act, 1923 এর অধীনে অপরাধ করেছেন বলে ধরে নেওয়া হবে।
একদিক থেকে চিন্তা করলে এই আইটি যথাযথ এবং দরকারি, যেমন ধরুন সরকারের সামরিক পরিকল্পনা, স্পর্শ কাতর যায়গার নকশা ইত্যাদি রক্ষার জন্য এই আইনটি জরুরী এবং মূলত সেই উদ্দেশ্যেই এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু আবার এই আইনের বিস্তারিত পটভূমিতে সরকারী যে কোন সংস্থা ও যে কোন এলাকা এই আইনের মধ্যে পড়ে যায় ফলে পাবলিক প্লেস বা জনগণ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রমও এর আয়তায় পরে যেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য গোপনীয়তা এই ধারা হুমকি স্বরূপ।
উদাহরণ – ৭
যেমন ধরুন, উপকূলীয় বাধ নির্মাণ অফিস নামে খুলনায় একটা অফিস আছে, সেখানে সরকার নিযুক্ত একজন ইঞ্জিনিয়ার আছেন যিনি কিনা বাধে কনক্রিটের বদলে বালি দিয়ে কাজ চালাতে দিচ্ছেন। এখন একজন সাংবাদিক বা নাগরিক বিষয়টি অনুসন্ধান করলো, অফিসে গিয়ে খোজ খবর নিলো এবং ছবি তুলল। তিনি এই আইনে ফেঁসে যতে পারেন।
এর ফলে এই ধারার ভয়াবহ অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। মজার বিষয় হল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হওয়া আগেও এই আইনটি কার্যকর ছিল কিন্তু তখন এই আইন নিয়ে কোন শোরগোল দেখা যায়নি কারণ এর প্রয়োগ আমাদের চোখে পড়ে না।
অন্যদিকে আইনের ব্যখ্যার মাধ্যমে এই আইনের অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করে এছাড়া উচ্চা আদালতের জুডিশিয়াল এক্টিভিজমও আমাদের জন্য বিষয়গুলো সহজ করে দিতে পারে।
ধারা ৩৪; হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড;
এই আইনে হ্যাকিং বলতে বোঝায়,
- (ক) কম্পিউটার তথ্য ভাণ্ডারের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল, পরিবর্তন বা তার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিসাধন করা; বা
- (খ) নিজ মালিকানা বা দখল-বিহীন কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে সেটির ক্ষতিসাধন করা।
হ্যাকিং করলে সেটি একটি অপরাধ হবে এবং
- এই অপরাধটি প্রথমবার করল, তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে, তিনি যাবজ্জীবন বছর কারাদণ্ড, বা সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
এখানে হ্যাকিং এ ব্যখ্যা অনেক বিস্তারিত এবং যেহেতু এই আইনটি Exhustive না তাই এটাকে আরও সুস্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
কিভাবে ও কোথায় মামলা দায়ে করা করতে হয়?
আপনি মামলা করার কারণ উদ্ভব হলে নিকটস্থ থানায় গিয়ে তা জিডি বা এফ আই আরের মাধ্যমে জানাতে হবে। থানা বিষয়টা তদন্ত করে দেখবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং বিষয়টি আদালতের নিকট প্রেরণ করবে।
অন্যদিকে থানা অভিযোগটি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি একজন বিজ্ঞ উকিলে মাধ্যমে আর্জি দিয়ে সরাসরি আদালতের নিকট পেশ করে বিচার চাইতে পারেন।
আদালত / ট্রাইব্যুনাল
এই আইনের বিচার হবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ধারা ৬৮ এর অধীন গঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালে। উল্লেখ্য বর্তমানে সারা দেশে সুধু একটাই সাইবার ট্রাইব্যুনাল আছে যা ঢাকাতে অবস্থিত। এই ট্রাইব্যুনালে বিচারক হবেন একজন দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ।
আইনি প্রক্রিয়া
এই আইন ফৌজদারী কার্যবিধি (যতদূর সম্ভব) অনুসরণ করবে, ট্রাইব্যুনাল ফৌজদারি কার্যবিধির অধ্যায় ২৩ এ বর্ণিত পদ্ধতি যতদূর সম্ভব অনুসরণ করবে। তবে কোন পুলিশ অফিসারের রিপোর্ট ব্যতীত আদালত এই আইনের অধীনে বিচার করবে না। [ধারা ৪৮, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮]
সাক্ষ্য ও প্রমাণ
এই আইনটি একটি বিশেষ আইন তাই সাক্ষ্য ও প্রমাণের ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইনের সাথে সাথে এই আইনে প্রদত্ত ক্ষমতাও ব্যবহৃত হবে। ডিজিটাল, ইলেকট্রনিক ডাটা ও ইনফরমেশন এই আইনের অধীনে স্পষ্টতই ব্যবহার হবে। যা অন্য কোন আইনে সরাসরি ব্যবহার করার যো নেই।
তবে সমস্যা হচ্ছে তা কি রূপে ব্যবহৃত হবে, কিভাবে প্রক্রিয়াজাত জাত হবে তার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন নেই, তাছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে ডিজিটাল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের ক্ষমতা সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কারো করার ক্ষমতা নেই তাই ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা করাটা একটু কঠিন বটে।
আলোচনা
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের এমন একটা আধুনিক আইন প্রয়োজন ছিল কিন্তু এই আইনে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে, রয়েছে এমন কিছু ব্যখ্যা ও সংজ্ঞায়ন যার পরিধি অতি বিস্তারিত তাই এর মাধ্যমে সহজেই কোন ব্যক্তিকে ফাঁসানো যেতে পারে। অন্যদিকে সরকার এর অপব্যবহার ঠেকাতে একটি সেইফটি নেট দিয়েছে, যেখানে একজন পুলিশ অফিসারের রিপোর্ট ছাড়া এই আইনের অধীনে কোন মামলা চালানো যাবে না কিন্তু সেটি তৈরি করেছে আরেক নতুন সমস্যা এখন আবার পুলিশের সঠিক রিপোর্ট ছাড়া কোন মামলা করা ও চালানো বেশ চ্যলেঞ্জিং।
এমন অবস্থায় সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৫৯ ধারা অনুসারে অসুবিধা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। অন্যদিকে এই আইনের অনেকগুলো বিষয়তে সংবিধানকে সংশ্লিষ্ট করে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়া যায়। তাছাড়া আমাদের উচ্চ আদালত আমাদের গাইডলাইন দিয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারেন।
আপনি সাইবার ক্রাইমের স্বীকার হলে কি করবেন?
আপনি ভিক্টিম হলে:
আপনি যদি মনে করেন যে এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ আপনার সাথে বা অন্য কারো সাথে হতে পারে তবে আপনি অতিসত্বর বিষয়টি নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি করুন। যেমন ধরুন, আপনার ফেসবুক একাউন্টে ঢুকতে পারছেন না, কিন্তু আপনার একাউন্ট একটিভেটি দেখাচ্ছে।
অন্যদিকে যদি মনে করেন যে এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ আপনার সাথে হচ্ছে বা হয়েছে। যেমন ধরুন, কেউ আপনার আইডি হ্যাক করেছে বা ব্যক্তিগত বা মূল্যবান তথ্য বা ছবি নিয়ে ব্লকমেইল করছে ইত্যাদ। আপনি অতিদ্রুত বিষয়গুলোর স্কিনসর্ট নিয়ে রাখুন যে ব্যক্তি করছে তার যতটা সম্ভব বৃত্তান্ত রেকর্ড করে রাখুন এবং নিকটস্থ থানায় গিয়ে এজাহার করুন। তখন থানার মাধ্যমে মামলা হবে এবং সরকারী কৌশলীর মাধ্যমে মামলাটি পরিচালিত হবে।
নিজে মামলা করতে চাইলে
থানা মামলা না নিতে চাইলে আইন এবং প্রযুক্তি ভাল বোঝে এমন একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন। মনে রাখবেন এই আইনটি একটি বিশেষ আইন এবং অনেক স্পর্শকাতর আইন তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সাক্ষ্য প্রমাণ সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং যথাযথ ভাবে আদালতে পেশ করে আদালতকে পারসু (persuade) করতে হবে নয়তো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
আপনাকে ফাঁসানো হলে
অন্যদিকে আপনি যদি মনে করেন যে আপনার সরল মনে করা কোন কাজকে কেউ অপব্যবহার করে আপনাকে ফাঁসাতে চাইছে তবে ঠিক তখনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী শরণাপন্ন হোন এবং তার উপদেশ গ্রহণ করুন। আপনার একটু অলসতাও তখন মারাত্মক পরিণাম ডেকে আনতে পারে।
সর্বোপরি বলবো কৌতুহলী হওয়া ভাল, নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতাও আপনার রয়েছে কিন্তু তাতে যেন অন্য কারো ক্ষতি না হয় সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। আইন জানুন, আইন মানুন আর ভাল থাকুন।