কপিরাইট কি?

কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব কি?

কপিরাইট (Copyright) বা বাংলায় মেধাস্বত্ব, গ্রন্থস্বত্ব, লেখকস্বত্ব একজন সৃষ্টিশীল লেখক, প্রনেতা বা শিল্পীর তার সৃষ্ট মূল (Original) , অনন্য (Unique) লেখা, তৈরি, সৃষ্টির ফল স্বরুপ এক বিশেষ ধরনের রাইট বা অধিকার। একজন সৃষ্টিশীল ব্যক্তি যে অধ্যবসায়, শ্রম, চর্চা, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা ব্যায় করে ,তার সৃষ্টিশীল কর্মের সৃষ্টি করেন সেটা যেন একমাত্র তিনিই যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে পারেন এবং তার নৈতিক ও অর্থনৈতিক সুফল ভোগ করতে পারেন তাই তিনি তার মৌলিক কর্মের উপর এই Copyright (কপিরাইট) বা মেধাস্বত্ব অধিকার পেয়ে থাকেন। কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অন্যতম প্রধান একটি ধরন। বাংলাদেশে কপিরাইট আইন, ২০২৩ এর মাধ্যমে কপিরাইটের অধিকার সংরক্ষিত করা হয়ে থাকে।

কখন কপিরাইট বা মেধাস্বত্বে অধিকার সৃষ্টি হয়?

কোন একজন ব্যক্তি (প্রণেতা) বা প্রতিষ্ঠান কোন সাহিত্য, নাট্য, সংগীত ও শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র, শব্দধ্বনি রেকর্ডিং, সম্প্রচার,  সম্পাদন, স্থাপত্য নকশা বা মডেল, ডাটাবেজ, তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম, লোকজ্ঞান বা লোকসাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি ইত্যাদি বিষয়ক কর্ম সৃষ্টি করেন যা অনন্য (Unique), নতুন, বা সম্পূর্ন নতুন ভাবে উপস্থাপিত বা যার জন্য বিশেষ অধ্যবসায়, শ্রম, সময়, চর্চা, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা বা বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন হয় এবং বিশেষ ভাবে যা এর আগে ঐ ধরনের কোন কর্মের চেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে আলাদা বা যা দেখলে এই বিষয়ে সাধারন ভাবে অভিজ্ঞ ব্যক্তির সম্পূর্ন নতুন বলে প্রতিয়মান হয়  অথবা যার সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্পূর্ন নতুন এবং অন্যদের থেকে আলাদা সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঐ কর্মটি একচেটিয়া ভাবে (Exclusively) ব্যবহারের অধিকার সহজাতভাবে পেয়ে থাকেন।

কপিরাইট

কপিরাইট কি

কপিরাইট বা মেধাস্বত্বের একচেটিয়া অধিকার কত সময়ের জন্য হয়ে থাকে

বাংলাদেশে কপিরাইট আইন, ২০২৩ এর ধারা ২২ থেকে ধার ২৯ অনুসারে একজন মেধাস্বত্বের প্রণেতা তার সৃষ্ট কর্মের জন্য আমৃত্যু এবং তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধীকারীরা ৬০ (ষাট) বছর পর্যন্ত ঐ কর্মের উপর একচেটিয়া (Exclusive) অধিকার পেয়ে থাকেন। তিনি বা তার উত্তরাধীকারা চাইলে এই অধিকার সম্পূর্ন ভাবে অথবা চুক্তি বা শর্তের মাধ্যমে অন্যের কাছে ন্যস্ত করতে পারেন, লাইসেন্স দিতে পারেন ও অন্যান্য অধিকার হস্তান্তর করতে পারেন। আবার একজন প্রণেতা তার কর্মটি কপিরাইট ফ্রি হিসাবে ঘোষনা দিয়ে জনসাধারনের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্তও করে দিতে পারেন।

কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব কেন প্রদান করা হয়ে থাকে?

একজন প্রণেতা তার সৃষ্টিশীল কর্মের পেছনে অনেক সময়, শ্রম, চর্চা, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি বা দক্ষতা ব্যবহার করে থাকেন যেটা করতে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই তিনি এই সময়ে অন্য কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। একজন প্রণেতা নিজেকে বিনিয়োগ করেন এবং নিজের আবেগ-অনুভূতি নিয়ে একটি সৃষ্টিশীল কাজের সম্পাদন করেন। তাই কপিরাইট বা মেধাস্বত্বের মাধ্যমে তাকে এবং তার কাজকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়ে থাকে, তার কাজের সর্বোত্তম বানিজ্যিক ব্যবহার এই কপিরাইট নিশ্চিত করে থাকে। এই কপিরাইটের কারনে একজন শিল্পী, লেখক, স্রষ্টা তার কৃত কর্মের উপর একচেটিয়া ভাবে (Exclusively) ব্যবহারের অধিকার পেয়ে থাকেন। অথ্যাৎ তার কাজের ফল যাতে তার অনুমতি ব্যতীত অন্য কেউ ব্যবহার করতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশে কপিরাইট আইন, ২০২৩ এর একজন প্রণেতা তার কর্মের উপর এই আইনি সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। 

বিভিন্ন ধরনের কপিরাইট

কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব এক ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি (Intellectual Property), সহজ ভাষায় এমন এক ধরনের সম্পত্তি যা মানুষের মেধা, মনন, বুদ্ধির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়, যা অন্য সব সম্পত্তির মত ধরা বা ছোয়া যায় না কিন্তু আবার যা সহজেই ব্যবহার করা যায়।

বাংলাদেশের কপিরাইট আইন অনুযায়ী কপিরাইট কর্মগুলোকে নিম্নের শ্রেনীতে ভাগ করা যায়:

  • (ক) সাহিত্য, নাট্য, সংগীত ও শিল্পকর্ম; যেমন: লিখিত কাজ, ভাষণ, নিবন্ধ, বই, পাঠ্যপুস্তক। ভিজ্যুয়াল কাজ:  ভাস্কর্য, আঁকা ছবি, গ্রাফিক্স ডিজাইন। বিভিন্ন ফর্মের শিল্পের প্রকাশ: নৃত্য,অভিনয়। ইত্যাদি।
  • (খ) চলচ্চিত্র;  যেমন: অডিওভিজ্যুয়াল কাজ, টিভি শো, সিনেমা, অনলাইন ভিডিও, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন।  ইত্যাদি।
  • (গ) শব্দধ্বনি রেকর্ডিং; যেমন:  সাউন্ড রেকর্ডিং ও মিউজিক কম্পোজিশন, সঙ্গীত, সুর, বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি, গজল, আবৃতি, বক্তৃতা ইত্যাদি।
  • (ঘ) সম্প্রচার;  যেমন: রেডিও, টিভি, চ্যনেল সম্প্রচার ইত্যাদি।
  • (ঙ) সম্পাদন; যেমন: যে কোন ধরনের সম্পাদনা ইত্যাদি।
  • (চ) স্থাপত্য নকশা বা মডেল; যেমন: কোন নকশা, ছক, ডিজাইন। ইত্যাদি
  • (ছ) ডাটাবেজ;  যেমন: কোন ধরনের, তথ্য, উপাত্ত, চার্ট, ছক, পরিসংখ্যান, গবেষণার ফল ইত্যাদি।
  • (জ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম;  যেমন:  ভিডিও গেম ও কম্পিউটার সফ্টওয়্যার, ওয়েব সাইট, জিজিটাল ডিজাইন, আর্ট ইত্যাদি।
  • (ঝ) লোকজ্ঞান বা লোকসাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি;

আরো দেখুন; ট্রেডমার্ক কি, কেন নিবন্ধন করবেন?

কখন কপিরাইট হয় না

কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে কিছু বিষয় কপিরাইটের অধীনে সাধারনত পরে না, যেমন; যা সম্পূর্ন নতুন কিছু নয় এমন কোন কর্মের সৃষ্টি, এমন কোন কর্ম যা এই বিষয়ে অভিজ্ঞ যে কেউ খুব সাধারন জ্ঞানের মাধ্যমে করে থাকতে পারে, ঐতিহ্যগত বা সাংস্কৃতিক কোন কর্ম যা যুগ যুগ ধরে চলমান আছে এমন কোন বিষয় কোন ব্যক্তি কপিরাইট দাবি করতে পারে না ।  শুধুমাত্র আইডিয়া বা সাধারন তথ্যের কপিরাইট হয় না যদিনা সেখানে কোন সৃজনশীল বিষয় বিদ্যমান থাকে বা বানিজ্যিক ব্যবহারের মত বিশেষ উপদান থাকে। কপিরাইট আইন অনুযায়ী কোনও কাজ কপিরাইট সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হতে সেটি সৃজনশীল হতে হবে এবং বাস্তব অবস্থান তুলে ধারর জন্য ব্যবস্থা থাকতে হবে। 

কপিরাইট লঙ্ঘন কি?

কোন ব্যক্তি যদি কপিরাইট প্রণেতা/ অধিকারী / মালিকের/ স্বত্বাধীকারি-র একচেটিয়া অধিকার বিনা অনুমতিতে বা আইন বর্হিভুত ভাবে ব্যবহার করে, কপি করে, নকল করে, ব্যবসায়ীক মুনাফা লাভের জন্য ব্যবহার করে, অপব্যবহার করে, অবৈধ ভাবে মালিকানা দাবি করে, মান বা মর্যাদা নষ্ট করে তবে সেই প্রণেতা বা অধিকারীর কপিরাইট  ক্ষুন্ন করা হয়েছে বা বা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।

কপিরাইট লঙ্ঘন / অনুমতি ছাড়া / অবৈধ ভাবে ব্যবহারের শাস্তি

এত কিছু জানার পর প্রশ্ন হতে পারে; কপিরাইট লঙ্ঘন করলে কি হবে? উত্তর হচ্ছে; বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে কেউ যদি প্রণেতার অনুমতি ছাড়া কপিরাইট লঙ্ঘন বা অবৈধ ভাবে ব্যবহার করে তখনে সেই ব্যক্তি কপিরাইট আইনের পঞ্চদশ অধ্যায় অনুসারে কপিরাইট লঙ্ঘনের দায়ে দায়ী হবেন এবং তখন সেই কপিরাইটের প্রণেতা / মালিক / স্বত্ত্বাধিকারী একাধিক ফোরামে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন।

১। কপিরাইট লঙ্ঘনের দেওয়ানি প্রতিকার:

কোন ব্যক্তির কপিরাইটের অধিকার যদি লঙ্ঘিত হয় তবে তিনি নিষেধাজ্ঞা, ক্ষতিপূরণ, হিসাব এবং অন্যান্য সকল প্রতিকার এবং স্বত্ব লঙ্ঘনের দায়ে এবং আইন অনুসারে অন্য যে কোন ধরনের প্রতিকার পেতে পারেন। এই জন্য তাকে দেওয়ানি কার্যধারা অনুসারে সংলিশ্লষ্ট এখতিয়ার সম্পন্ন জেলা জজ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।

২। কপিরাইট লঙ্ঘনের ফৌজদারি প্রতিকার:

কপিরাইট আইন, ২০২৩ এ সপ্তদশ অধ্যায় এ কপিরাইট লঙ্ঘনকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য বিভিন্ন ধরনের দন্ডের উল্লেখ করা হয়ছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল;

  • চলচ্চিত্রের কপিরাইট লঙ্ঘন এর দন্ড অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড।
  • অতিরিক্ত কপি মুদ্রণ ও প্রকাশনার জন্য দন্ড অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড এবং অতিরিক্ত কপি বাজেয়াপ্ত হবে।
  • অননুমোদিত সম্প্রচারের জন্য দণ্ড অনধিক ৩(তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং সেই অবৈধ সম্প্রচারটি বাজেয়াপ্ত হবে।
  • অননুমোদিত সম্পাদনের জন্য দণ্ড অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • অবৈধভাবে সম্পাদন করিবার জন্য দণ্ড অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী না হইয়া উহার প্রকাশ, পরিবেশন বা সম্পাদন করিবার দণ্ড অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড ।
  • পান্ডুলিপির মূল কপি অথবা প্রকাশিত বা মুদ্রিত গ্রন্থের বিক্রয় বা পুনঃবিক্রয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থের নির্ধারিত অংশ উহার প্রণেতাকে পরিশোধ না করার দন্ড অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড।
  • তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম লঙ্ঘন করিবার জন্য দণ্ড অনধিক ৪ (চার) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৪ (চার) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড। তবে যদি আদালতের যদি আদলতের নিকট তথ্য-প্রমানে মনে হয় যে, তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মটি ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক লাভের উদ্দেশ্যে করা হয় নাই, তাহালে ঐ অপরাধে দোষী ব্যক্তি অন্যূন ৩ (তিন) মাস কারাদন্ড বা অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • অন্য যে কোন কপিরাইট লঙ্ঘন (যা বিশেষ ভাবে এই আইনে উল্লেখ নেই) তার জন্য দন্ড অনধিক ৪(চার) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড। তবে যদি আদালতের যদি আদলতের নিকট তথ্য-প্রমানে মনে হয় যে, উক্ত লঙ্ঘনটি ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক লাভের উদ্দেশ্যে করা হয় নাই, তাহালে ঐ অপরাধে দোষী ব্যক্তি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড বা অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

যখন কপিরাইট লঙ্ঘন হয় না /  ন্যায্য ব্যবহার – Fair Uses Policy

সাধারনত কোন কপিরাইট কর্মের অননুমদিত ব্যবহার হলে তাতে প্রণেতার কপিরাইট অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন, কেউ যদি শিক্ষা, গবেষনা, সমালোচনা, মন্তব্য ইত্যাদি কাজে কোন কপিরাইট কাজ ব্যবহার করে এবং যার উদ্দেশ্য বাণিজ্যিক বা মুনাফা লাভের জন্য নয় এমন ক্ষেত্রে কপিরাইট লঙ্ঘন হয় না। এক্ষেত্রে কপিরাইট কর্মটির কোন অংশ উল্লেখ বা প্রকাশ করা যেতে পারে। আবার কোন কপিরাইট কর্মের উপর বেজ করে যদি সে সম্পূর্ন নতুন ও ইউনিক কোন কর্মের সৃষ্টি করে তাও নতুন কর্ম হিসাবে স্বিকৃত হতে পারে। 

সহজ ভাষায় বলা যায়, কোন কপিরাইট কর্ম যদি মানব কল্যানে, শিক্ষা, গবেষনা ইত্যাদি উদ্দেশ্যে অ-বাণিজ্যিক ভাবে এবং অলাভজনক উদ্দেশ্যে এবং কপিরাইট প্রণেতার প্রকৃত উদ্দেশ্য খর্ব না করে ব্যবহার করা হয় তখন সেটা কপিরাইটের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয় না। এই ধরনের কপিরাইটের ব্যবহারকে বলে কপিরাইটের ন্যায্য ব্যবহার বা Fair Use.

এই ন্যায্য ব্যবহার বা Fair Use এর মাধ্যমে এটা নিশ্চিত করা হয় যাতে কপিরাইট কর্মটির মাধ্যমে যাতে মানব কল্যান হয় এবং মানুষ জানতে ও শিখতে পারে এবং একই সঙ্গে নতুন কিছু সৃষ্টি হওয়ার পথ সুগম হয় তবে এটি  কখনই বাণিজ্যিক লাভের আশায় করা যাবে না।

কপিরাইট নিবন্ধন

যে কোন কপিরাইট কর্ম বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যায় এবং রেজিস্ট্রারার নিবন্ধনের প্রক্ষিতে একটি সনদ প্রদান করে থাকেন। কপিরাইট নিবন্ধন একটি ঐচ্ছিক বিষয় তবে নিজের কর্মটির সুরক্ষা নিশ্চিতে এবং বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের লক্ষ্যে আপনার কপিরাইট কর্মটি নিবন্ধন করে রাখা অত্যন্ত জরুরী অন্যথায় পরবর্তীত কোন দ্বন্দ্বের উদ্ভব হলে সেটা সমাধান করতে বেশ জটিলতা পোহাতে হয় এবং অযথা অনেক অর্থ ও শ্রম ব্যায় হয়।

মনে রাখতে হবে নিজের কোন কপিরাইট কর্মের স্বত্ব অন্য কাউকে প্রদান করতে অবশ্যই আইন অনুসারে চুক্তি করে নিতে হবে এবং এজন্য বাধ্যতামূলক না হলেও কপিরাইট নিবন্ধন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন কাজ। তাই কোন কপিরাইট কর্ম অন্য কাউকে দেখতে বা পড়তে দেয়ার আগেই নিজের কপিরাইট নিবন্ধন করে রাখা অথবা চুক্তি করে রাখা শ্রেয়।

কিভাবে একটি কর্ম কপিরাইট নিবন্ধন করতে হয় সেই বিষয়ে আমরা আমাদের পরবর্তী আটিকেলে বিস্তাতির আলোচনা করব, তাই আমাদের ওয়েব সাইটিতে অবশ্য নজর রাখুন।

মন্তব্য

আমাদের দেশে কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব বিষয়কে সাধারন মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই একটু কম বোঝে, এর অসীম গুরুত্ব, লঙ্ঘনের ফলাফল সম্পর্কে সাধারন মানুষ বেশ অজ্ঞ, তাই খেলার ছলেই অনেকেই কপিরাইট লঙ্ঘন করে ফেলে তাই এই বিষয়ে আমাদের লেখা, শেয়ার করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রত্যেক লেখক, প্রকাশক, শিল্পী সহ সকল শিক্ষিত মানুষের কর্তব্য একই সাথে নিজেদের কপিরাইট কর্মের নিয়ন্ত্রন, নিবন্ধন সহ সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই আমরা আরো ভালো ভালো বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ উপহার পাব, আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশিত হবে এবং তার প্রেক্ষিতে তরুনরা ভালো কাজ করার সাহস পাবে।

ল হেল্প বিডি আইনের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাধারণ ভাবে আইন নিয়ে আলোচনা করে। আইনের আশ্রয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একজন আইনজীবীর পর্যাপ্ত গবেষণা ও কৌশল প্রয়োগ করেন যার ফলে তা সাধারণ আইনের ব্যতিক্রম হতে পারে, আমাদের লেখা এবং সাধারণ সাহায্য কোন আইনজীবীর বিকল্প নয়। প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের সেবা নিতে চাইলে ফর্ম, ই-মেইল lawhelpbd@gmail.com বা ফেসবুকের ম্যসেঞ্জারের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

Rayhanul Islam

অ্যাডভোকেট রায়হানুল ইসলাম ল হেল্প বিডির প্রধান লেখক ও সম্পাদক। তার আইন পেশার পাশাপাশি তিনি আইনকে সহযে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তথ্য ও প্রযুক্তি, মনোবিজ্ঞান এবং দর্শনে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। প্রয়োজনে: rayhan@lawhelpbd.com more at lawhelpbd.com/rayhanul-islam

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: দু:খিত এই লেখাটির মেধাসত্ত্ব সংরক্ষিত !!