জমির নামজারি (Mutation) কীভাবে করবেন?

মনে করুন আপনি একটি জমি কিনলেন। কেবল অর্থের লেনদেনের মধ্য দিয়েই কি আপনার জমি কেনার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়? না, জমি কেনার পর মিউটেশন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, যা ক্রয়কৃত জমিতে আপনার স্বত্বপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। মিউটিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘নামজারি’। ভূমি ব্যবস্থাপনায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। জমি ক্রয় বা অন্য কোনো উপায়ে মালিকানা পরিবর্তন হয়ে থাকলে হালনাগাদ রেকর্ড সংশোধন করার ক্ষেত্রে মিউটেশন একটি অপরিহার্য নাম। নামজারি বা নাম খারিজ বলতে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে বোঝায়। অর্থাৎ পুরনো মালিকের নাম বাদ নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে নামজারি বা নাম খারিজ করা বোঝায়।

কোনো ব্যক্তি ভূমির মালিকানা অর্জন করলে তার নামে খাজনা কর দেয়ার সুবিধার্থে রেকর্ড সংশোধন করে হালনাগাদ করতে হয়। দুটি জরিপের (সিএস থেকে সংশোধনী জরিপ অথবা একটি সংশোধনী জরিপ থেকে আরেকটি সংশোধনী জরিপ) মধ্যবর্তী সময়ে ভূমির মালিকানার যে পরিবর্তন হয় নামজারির মাধ্যমে তা সংশোধন করা হয়। মালিকানা পরিবর্তন হলেই মিউটেশনের প্রশ্ন আসে। তাই মালিকানার পরিবর্তন যে কারণে ঘটে তা জানা প্রয়োজন। মালিকানা কয়েকভাবে পরিবর্তন হয়ে থাকে।

প্রথমত মালিকের মৃত্যুতে তার ওয়ারিশরা জমির মালিক হন, জমি ক্রয়, দান, ওয়াকফ, ইত্যাদি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়।

দ্বিতীয়ত খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া হলে বা বিধিমতো বিক্রি করলে বন্দোবস্তি প্রাপক বা ক্রেতা সেই জমির মালিক হন।

তৃতীয়ত সরকার কারো সম্পত্তি অধিগ্রহণ করলে বা ক্রয় করলে সরকার সেই সম্পত্তির মালিক হন।

চতুর্থত, নিলাম বিক্রি হলে নিলাম ক্রেতা জমির মালিক হন।

পঞ্চমত কোনো ব্যক্তির সিলিং ঊর্ধ্ব জমি থাকলে সরকার সেই অতিরিক্ত জমির মালিক হয়।

নামজারি কোথায় করতে হয়?

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর দরখাস্ত করে মিউটেশন বা নামজারি করতে হয়। দরখাস্তের সঙ্গে ক্রয় দলিল/ দানপত্র বা প্রাসঙ্গিক দলিলের এর সত্যায়িত কপি, পিঠ দলিল (যদি থাকে), সিএস/আরএস/এমআরআর/পিআরআর পর্চা/এসএ পর্চা, বিএস/ হাল পর্চার সত্যায়িত কপি, এ যাবতকালে প্রদত্ত খাজনার রশিদ ও কোর্ট ফি জমা দিতে হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্নরকম মিউটেশন ফি প্রদান করতে হয়। যেমন নামজারি/জমাভাগ ফি (খতিয়ান প্রতি) ২.৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন মিউটেশন পর্চা বাবদ ২২৫ টাকা, কোর্টফি (দরখাস্তের সঙ্গে জমা দিতে হয়) ১০ টাকা।

(সংগৃহীত)

ল হেল্প বিডি আইনের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাধারণ ভাবে আইন নিয়ে আলোচনা করে। আইনের আশ্রয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একজন আইনজীবীর পর্যাপ্ত গবেষণা ও কৌশল প্রয়োগ করেন যার ফলে তা সাধারণ আইনের ব্যতিক্রম হতে পারে, আমাদের লেখা এবং সাধারণ সাহায্য কোন আইনজীবীর বিকল্প নয়। প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের সেবা নিতে চাইলে ফর্ম, ই-মেইল lawhelpbd@gmail.com বা ফেসবুকের ম্যসেঞ্জারের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: দু:খিত এই লেখাটির মেধাসত্ত্ব সংরক্ষিত !!