৫৪ ধারা কি? বিনা পরোয়ানায় পুলিশ গ্রেফতার করলে আপনার অধিকার কি?
আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সাধারনত কোন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে থাকে, এই গ্রেফতার করা হয় সুনির্দিষ্ট আইনের প্রদত্ত ক্ষমতার ভিত্তিতে অথবা আদালতের আদেশের বা পরোয়ানারা বা ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে কিন্তু এর কিছু ব্যতিক্রমও আছে যেখানে পুলিশ সন্দেহ বসত কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু তাই বলে কি পুলিশ ইচ্ছে করলেই গ্রেফতার করতে পারে? আর কখন, কিভাবে ও কি কি কারণে গ্রেফতার করতে পারে? এর প্রতিকার ও উপায় কি? এসব বিষয় নিয়েই আজকের এই আলোচনা।
গ্রেফতার কি ও কেন করা হয়?
দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং যাতে অপরাধীরা পালিয়ে যেতে না পারে কিম্বা যাতে করে অপরাধ করার পর বিচার কার্যক্রমকে ভয় ভীতি বা লোভ দেখিয়ে প্রভাবিত না করতে পারে তাই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এই গ্রেফতারের জন্য রয়েছে সুবিস্তারিত প্রক্রিয়া।
গ্রেফতার প্রক্রিয়া আমরা প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি।
অমলযোগ্য মামলায় পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার:
সাধারণত যখন কোন বড় অপরাধ হয় পুলিশ সেই বিষয়টিকে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে লিপিবদ্ধ করে এবং সাধারণ এই অপরাধগুলো এমন হয় যে অপরাধী আইনের হাত থেকে পালিয়ে বাচার চেষ্টা করে, তাই আইন এইসব বড় ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশকে অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দিয়েছে। যেখানে কোন পরোয়ানা বা এরেস্ট ওয়ারেন্ট লাগে না। তবে এটা মনে রাখতে হবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ অবশ্যই থাকতে হবে।
আমাদের জন সাধারণের মধ্যে একটা সাধারণ ভ্রান্ত ধারনা আছে যে সব এরেস্ট করতে হলে পুলিশের কাছে এরেস্ট ওয়ারেন্ট থাকতে হবে যা সব সময় সত্যি নয়। [নিচে আলোচনা করা হয়েছে কখন গ্রেফতারি পরোয়ানা লাগে (Arrest Warrant)]
অ-অমলযোগ্য মামলায় পরোয়ানা সহ গ্রেফতার:
সাধারণত ছোটখাটো অপরাধের বিষয়ে পুলিশ সরাসরি কোন একশনে যায় না বরং তা সাধারণ ডায়েরির অন্তর্ভুক্ত করে আদালতের কাছে প্রেরণ করে, আদালত তখন বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত করার আদেশ দেয় এবং প্রয়োজনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এবং এইসব ক্ষেত্রে পুলিশ পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে না।
এই দুই ধরন ছাড়াও গ্রেফতারের আরও একটি বিশেষ ধরন আছে যা আমাদের এই আলোচনার প্রধান বিষয়। যা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার। পুলিশের এই বিশেষ ক্ষমতাই বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার কারণ তারা এর মাধ্যমে যে কাউকে সন্দেহ বসত গ্রেফতার করতে পারে। এবং এর অপব্যবহারও হচ্ছে আশংকাজনক ভাবে। সাধারণত এই গ্রেফতার ৫৪ ধারায় গ্রেফতার হিসেবেই বেশি পরিচিত।
৫৪ ধারায় গ্রেফতার:
ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে বা জড়িত থাকার যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ বা সন্দেহ থাকলে, আইনসঙ্গত অজুহাত ছাড়া কারও কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জাম থাকলে, সংবাদপত্র বা গেজেটের মাধ্যমে ঘোষিত অপরাধী হলে, প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে পালিয়ে গেলে, পুলিশের কাজে বাধা দিলে বা পুলিশের হেফাজতে থেকে পালিয়ে গেলে, দেশের বাইরে অপরাধ করে পালিয়ে এলে, চোরাই মাল থাকলে বা অন্য কোন থানা থেকে গ্রেফতারের অনুরোধ থাকলে যে কোন ব্যক্তিকে পুলিশ সন্দেহবশত গ্রেফতার করতে পারবে।
৯টি ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারা মোতাবেক নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে পুলিশ কোন ব্যাক্তিকে বিনা পরোয়ানায় / ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে:
- ১. কোন আমলযোগ্য অপরাধের সহিত জড়িত ব্যাক্তিকে, যার বিরুদ্ধ অভিযোগ আছে।
- ২. আইনসংগত কারন ব্যতীত যার নিকট ঘর ধবংস করার হাতিয়ার পাওয়া যাবে।
- ৩. যাকে সরকার অপরাধী বলে ঘোষনা করা হইসে।
- ৪. যার নিকট চোরাই মাল পাওয়া যাবে।
- ৫. পুলিশ সদস্যদের কাজে বাধা প্রদানকারি ব্যাক্তি অথবা, যে ব্যাক্তি আইনসংগত হেফাজত থেকে পলায়ন করেছে তাকে।
- ৬. সামরিক বাহিনী থেকে পলায়নকারী ব্যাক্তিকে।
- ৭. বাংলাদেশে করা হলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হত, বাংলাদেশের বাইরে এরুপ অপরাধ করলে উক্ত ব্যাক্তিকে।
- ৮. কোন মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী যে ফোজদারী কার্যবিধি আইনের ৬৫৬ ধারা (৩) উপধারানুসারে নিয়ম লংঘন করে ।
- ৯. যাকে গ্রেফতারের জন্য অন্য পুলিশ অফিসারের নিকট হতে অনুরোধ পাওয়া যাবে।
দেশের অতীত ও সাম্প্রতিক ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৫৪ ধারা যতটা না অপরাধীকে সাজা দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি ব্যবহার হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য। ‘ঈদ ও পূজার মতো বড় উৎসবের আগে পুলিশ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ৫৪ ধারাকে অপব্যবহার করে। এর জন্য পুলিশের কোন সাজা হয় না।’ কিন্তু পুলিশ অপরাধ করলে তারও বিচারের বিধান রয়েছে। ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে এমন প্রমাণ হলে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না।
৫৪ ধারায় গ্রেফতারের পর [প্রতিকার]
উপরোক্ত বিষয় গুলো বিবেচনা করে পুলিশের সন্দেহ করার কারণ থাকলে পুলিশ ৫৪ ধারায় পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে বটে কিন্তু গ্রেফতারের পরেও তাদের বেশ কিছু দায়িত্ব থাকা যা পালন করা আবশ্যক। তাই ভুক্তভোগীর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে এবং যতদ্রুত সম্ভব একজন আইন জীবীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
বিনা পরোয়ানায় এই ধারা গ্রেফতার করার পর পুলিশের প্রথম কাজ হচ্ছে যেই সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া তথা অভিযোগ গঠন করা। যদি পুলিশ মনে করে না সন্দেহটা আসলে অমূলক হয়েছে পুলিশ গ্রেফতার করে ছেড়ে দিতে পারে আর যদি সন্দেহ সত্যি মনে করেন তবে তা মামলার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আগাবে।
সন্দেহর ফলাফল যাই হোক যদি পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধের কোন আলামত বা লিংক খুঁজে না পায় সেক্ষেত্রে পুলিশ সেই ব্যক্তিকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৬১ ধারার অধীনে আদালতে হাজির করবে এবং এটি একটি সাংবিধানিক অধিকারও বটে যা আমাদের সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে।
এরপর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সকল বিষয় বিবেচনা করে তদন্তের সাথে তাকে আটক রাখার নির্দেশ দিতে পারেন বা জামিন দিতে পারেন বা ছেড়েও (খালাস) দিতে পারেন।
যদি তারপরও কারো মনে হয় যে আদেশটি যথাযথ হয়নি তবে দায়রা আদালতে এবং তাতেও কাজ না হলে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা যায়।
অপরদিকে, যদি কাউকে ভোগানোর জন্য ৫৪ ধারায় আটক করা হয় তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অবৈধ আটকের মামলা করারও সুযোগ রয়েছে।
অনেক সময় দেখা যায় এই সব নিয়ম মানা হয় না এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যখন কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে হয়রানি করা হয়। আবার অনেক সময় গ্রেফতারের পরপরই তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনার বদলে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশ দেয়া হয়। কারণ এ আইনে আটকাদেশ দেয়ার জন্য কোন অপরাধের অভিযোগ আনার প্রয়োজন হয় না, কেবল সন্দেহই যথেষ্ট।’ এমন প্রেক্ষাপটেই ৫৪ ধারা সংশোধনের দাবি ওঠে।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আবেদনে দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের বা ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা মতে সন্দেহবশত কাউকে গ্রেফতার এবং ১৬৭ ধারা মতে তদন্তের নামে আসামিকে রিমান্ডে এনে শারীরিক অত্যাচারের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করে ১৯৯৮ সালের ২৯ নভেম্বর সরকারের প্রতি রুল জারি করেন আদালত। এতে বলা হয়, সন্দেহবশত কাউকে গ্রেফতার এবং তদন্তের নামে রিমান্ডে এনে আসামিকে শারীরিক নির্যাতন করা থেকে নিবৃত্ত করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এ ব্যাপারে সরকারকে জানতে হবে। রুলের ওপর শুনানি গ্রহণ করে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল বিচারপতি হামিদুল হক ও বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন। আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ১১ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে বলেন আদালত।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে বিগত চারদলীয় জোট সরকার। আবেদনে হাইাকোর্টের রায় স্থগিতের আবেদন জানানো হয়। আবেদনে বলা হয়, সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সম্পর্কে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনের এ দুটি ধারা সঠিক। এ জন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের কোন প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট আইন সংশোধনের কোন নির্দেশনাসমূহ স্থগিত করেননি। সরকারের আপিল এরপর ২০০৭ ও ২০০৮ সালে দুবার শুনানির জন্য কার্য তালিকায় এলেও তখন দেশে জরুরি আইন থাকায় শুনানি হয়নি।
৫৪ ধারা বিষয়ক হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশনা:
হাইকোর্ট রায়ে ৫৪ ধারার ২ উপ-ধারা সংশোধনের জন্য সরকারকে কয়েকটি নির্দেশনা প্রদান করেন। এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলোঃ
- (১) আটকাদেশ দেয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না,
- (২) কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে,
- (৩)গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে,
- (৪) বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতার নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোনে বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে,
- (৫) জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে,
- (৬) পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবেন
- (৭) এবং বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাকে দ-বিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।
হাইকোর্ট নির্দেশনায় আরও বলেন, পুলিশ হেফাজতে কারাগারে গ্রেফতার ব্যক্তি মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘটনাটি জানাতে হবে এবং পুলিশ বা কারা হেফাজতে কেউ মারা গেলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে তা তদন্তের ব্যবস্থা করবেন। মৃত ব্যক্তির ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্তে বা তদন্তে যদি মনে হয় ওই ব্যক্তি কারা বা পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট মৃত ব্যক্তির আত্মীয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তা তদন্তের নির্দেশ দেবেন।
ব্লাস্টের মতে, ‘৫৪ ধারায় বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার এবং পরে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট ১৫ দফা নির্দেশনা প্রদান করে। রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল করে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে আপিলের অনুমতি প্রদান করলেও হাইকোর্টের নির্দেশনা স্থগিত করেনি। সেগুলো এখনো বহাল। রাজনৈতিক দলের নেতারা ক্ষমতার বাইরে থাকলে এই আইন সংশোধনের জন্য জোর দেন। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে আইনটিকে ব্যবহার করেন। এ কারণেই হাইকোর্টের নির্দেশ বা রায় আজও কার্যকর হয়নি।
বিনা পারোয়ানায় গ্রেফতারের আরো কিছু ধারা
অন্যদিকে এই ৫৪ ধারা ছাড়াও, একজন সিনিয়র পুলিশ সদস্য বা পুলিশ অফিসার নিম্মলিখিত ধারানুযারী কোন ব্যাক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন।
- ফোজদারী কযবিধি আইনের ৫৫,৫৬,৫৭,১২৪(৬),১২৮,১৫১,১৭১,৪০১(৩) ধারা মোতাবেক।
- মোটরযান আইনের ১৬০,
- রেল আইন ১৩১ ও ১৩২,
- পুলিশ আইন ৩৪, ও ৩৪(ক),
- অফিম আইন ১৪ ও ১৫,
- Gun আইন ১২ ও ১৩,
- আফগারি আইন ৬৭,
- বন আইন ৬৪(ক),
- খেয়া আইন ৩১,
- জুয়া আইন ১১,
- পাসপোর্ট আইন ৪,
- ডিএমপি অধ্যাদেশ ১০০
- পিআরবি নিয়ম ৩১৬
যা কিনা সু-ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহার বেশি হচ্ছে। তাই এসব বিষয়েও সুস্পষ্ট নীতিমালা এবং দায় ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
অন্য দিকে সাধারণ জনগণের এই গ্রেফতারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা না থাকায় সুবিধা ভোগীরা একের পর এক এর অপব্যবহার করে যাচ্ছে তাই আইনের প্রাথমিক ধারনা বিস্তারে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণও খুব জরুরী নয়তো সুধু আইন করে কোন লাভ হবে না এবং মানুষ আইনের সুফল পাবে না।
আমাদের সব সময় আইন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে তাদের সব সময় সহযোগিতা করতে হবে, অহেতুক ঝামেলা করা যাবে না তবে তারা কোন ভুল বা অন্যায় করতে সেখানে চুপ করেও থাকা যাবে না, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। তাই এমন কোন ঝামেলায় পড়লে যত দ্রুত সম্ভব একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। আর যদি মনে করেন আপনার হয়রানী মূলক ভাবে এরেষ্ট হওয়া সম্ভাবনা আছে তবে হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আগাম জামিন নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন।