তামাদি মেয়াদের উপর প্রতারণা, স্বীকারােক্তি ইত্যাদির প্রভাব | তামাদি ০৫

ধরুন কোন একটা বিষয় জানতে পারলে আপনি মামলা করতেন কিন্তু অপর পক্ষ ষড়যন্ত্র করে আপনার কাছ থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছিল এবং এরই মধ্যে তামাদির মেয়াদ শেষ হয়ে গেল অথবা ধরুন কেউ আপনাকে তামাদি সময়ের বাইরে নিয়ে মামলা থেকে বাচতে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে অল্প অল্প করে আপনার পাওনা পরিশোধ করলে এমন অবস্থায় কি ব্যবস্থা নিতে হবে তা বলা আছে তামাদি আইনের ১৮-২০ ধারায়

কারচুপি বা জালিয়াতির প্রভাব (ধারা ১৮)

প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে কোন বিষয় লুকালে তা জানার পর মামলা করা যাবে।

যদি কোন ব্যক্তির মামলা করার অধিকার হবার পরও অন্য কোন ব্যক্তি যদি নিজ স্বার্থে তাকে [যার মামলা করার অধিকার আছে] প্রতারণা পূর্বক সেই অধিকার সম্পর্কে জানা হতে থেকে বিরত রাখে বা সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে যেই দলিল প্রয়ােজন হয় তা লুকিয়ে রাখে, তখন সেই লােকের বিরুদ্ধে (যিনি প্রতারণা করেছেন বা লুকিয়ে রেখেছেন) মামলা করা সময় শুরু হবে, যখন বাদী প্রথম ঐ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন অথবা (২য় ক্ষেত্রে) যখন তিনি ঐ দলিল তিনি উত্তোলন / তৈরি করার সুযােগ পান।

তামাদি মেয়াদের উপর প্রতারণা, স্বীকারােক্তি ইত্যাদির প্রভাব

তামাদি মেয়াদের উপর প্রতারণা, স্বীকারােক্তি ইত্যাদির প্রভাব

স্বীকার করার প্রভাব (ধারা ১৯)

তামাদি মেয়াদের মধ্যে লিখিত ভাবে দায় স্বীকার করলে স্বীকার করার পর থেকে নতুন মেয়াদ শুরু হবে।
যদি এমন হয় যে, কোন ব্যক্তির কোন অধিকার বা সম্পত্তির সম্পর্কিত কোন মামলা করার সময়ের মধ্যে – যার বিরুদ্ধে সেই মামলা করার অধিকার হয় তিনি কারাে কাছে [বাদী বা অন্য কারো] লিখিত ভাবে সেই দাবি স্বীকার করেন, যেখানে তার সাক্ষর এবং তারিখ রয়েছে তখন সেই স্বীকার করার তারিখ হতে নতুন করে সময় গণনা সরু হবে।

বিষয় গুলাে একটু ভেঙ্গে দেখি:

  • ১. পরিষ্কার স্বীকারােক্তি থাকতে হবে।
  • ২. অধিকার / সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা না থেকে শুধু অধিকার স্বীকার করলেও চলবে।
  • ৩. স্বীকার করার পর থেকে নতুন সময় গণনা করা শুরু হবে।
  • ৪. স্বীকারােক্তি অবশ্যই সাধারণ ভাবে দেওয়া সময়ের মধ্যে হতে হবে।
  • ৫. যে কোন কারাে কাছে লিখিত ভাবে স্বীকার করলেই হবে, তবে সেখানে স্বাক্ষর (নিজের বা প্রতিনিধির) ও তারিখ থাকতে হবে।
  • ৬. তারিখ না থাকলে, সাক্ষ্য আইনের মাধ্যমে তারিখ প্রমাণ করা যাবে।

প্রতি বার পাওয়া পরিশোধে নতুন মেয়াদ (ধারা ২০)

পাওনা বা দায় যাত বার পরিশোধ করবে ততবার নতুন করে তামাদির সময় গণনা শুরু হবে।

কোন বংশগত দেনা বা অধিকারের আংশিক প্রদানের প্রভাব

যদি কোন ব্যক্তি বংশগত ভাবে দেনা বা অন্যকোন অধিকার পাওনা হয়ে থাকে এবং সেটা যদি এমন ধরনের হয় যে একাধিকবারে সেই পাওনা পরিশােধ করা যায়, তখন যদি সেই ব্যক্তি (যার কাছ থেকে পাবে) যদি সাধারণ তামাদি হবার সময়ের মধ্যেই সেই পাওনার একটি অংশ পরিশােধ করে তবে, সেই দিন থেকে নতুন করে আবার সময় গণনা শুরু হবে।


বন্ধুদের জানান

ল হেল্প বিডি আইনের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাধারণ ভাবে আইন নিয়ে আলোচনা করে। আইনের আশ্রয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একজন আইনজীবীর পর্যাপ্ত গবেষণা ও কৌশল প্রয়োগ করেন যার ফলে তা সাধারণ আইনের ব্যতিক্রম হতে পারে, আমাদের লেখা এবং সাধারণ সাহায্য কোন আইনজীবীর বিকল্প নয়। প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের সেবা নিতে চাইলে ফর্ম, ই-মেইল [email protected] বা ফেসবুকের ম্যসেঞ্জারের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

Rayhanul Islam

অ্যাডভোকেট রায়হানুল ইসলাম ল হেল্প বিডির প্রধান লেখক ও সম্পাদক। তার আইন পেশার পাশাপাশি তিনি আইনকে সহযে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তথ্য ও প্রযুক্তি, মনোবিজ্ঞান এবং দর্শনে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। প্রয়োজনে: [email protected] more at lawhelpbd.com/rayhanul-islam

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: দু:খিত এই লেখাটির মেধাসত্ত্ব সংরক্ষিত !!