দেওয়ানী কার্যবিধির আদেশ ২২, ২৩ এবং ২৬ – দে. কা. ১৬

দেওয়ানী কার্যবিধিতে কিছু গুরুত্বপূর্ন আদেশ হল, আদেশ ২২, ২৩, ২৬, ৩২ এবং আদেশ ৩৩ যেখানে বিধির নানান প্রয়োজনীয় দিক সবিস্তারে বর্ণনা করা আছে, এর মধ্যের কিছু সুনির্দিষ্ট ও সচরাচর প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হোল।

আদেশ, ২২। মত্যু, বিয়ে বা অসচ্ছলতা [Death, Marriage & Insolvency of parties]

দেওয়ানী কার্যবিধির  আদেশ ২২ বলা আছে মোকদ্দমার কোন পক্ষের মত্যু, বিয়ে বা অসচ্ছল হলে তখন মোকদ্দমার কি অবস্থা দাড়াবে।

মৃত্যু

বিধি, ১; মামলা করার অধিকার সৃষ্টি হলে এবং তার পর অপর পক্ষ মারা গেলে তার সেই অধিকার নষ্ট হয় না। 

  • কিন্তু সে ক্ষেত্রে ঐ ব্যাক্তির প্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট সময় বা ৯০ দিনের মধ্যে পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। (তামাদি আইন অনুচ্ছেদ ১৭৬ এবং ১৭৭) নয়তো মামলাটি অচল বা বাতিল হয়ে যাবে।

বিবাহ

বিধি, ৭; (মহিলার) বিবাহের কারনে বিবাদীর মামলা বিরুপ্ত হবে না, এবং আদালতের অনুমতিক্রমে স্ত্রীর ঋণের জন্য স্বামীর বিরুদ্ধে ডিক্রি জারি হতে পারে।

অসচ্ছলতা

বিধি, ৮; 

  • বাদী দেউলিয়া হলে মামলা ডিসমিস হবে না [চলবে]
  • বিবাদী দেউলিয়া হলে আদালত রিসিভার বা প্রতিনিধির নিকট নোটিশ দিয়ে মামলার খরচরে জন্য জামানত প্রদান করতে বলবেন। ব্যর্থ হলে মামলা অচল হবে।

এমন আদেশের কারণে মামলা খারিজ হলে তা প্রতিকার

 বিধি, ৯;  মামলা পুনরুদ্ধারের জন্য ছানি মামলা দয়ের করা যাবে।

বিধি, ৯ক; মামলা খারিজ বা রহিতের আদেশ বাতিলের জন্য অনধিক ৩০০০ টাকা খরচ সহ আবেদন করতে হবে। এ আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে । [ আদেশ, ৪৩ ]

দেওয়ানী কার্যবিধির আদেশ

আদেশ, ২৩। মোকদ্দমার দাবি  প্রত্যাহার [Withdrawal and adjustment of suits]

মোকদ্দমার পক্ষগন বিভিন্ন সময়ে মোকদ্দমার বিভিন্ন দাবি আংশিক বা পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করতে পারেন আর এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে দেওয়ানী কার্যবিধির  আদেশ ২৩ এ।

আদেশ, ২৩। 

বিধি, ১; আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে বাদী সম্পূর্ণ মামলা বা মোকদ্দমার কোন দাবি/ অংশ প্রত্যাহার করতে পারবে।

  • একের অধীক বাদী থাকলে প্রত্যাহারে সকলে সম্মতি থাকতে হবে।

বিধি, ২; বিধি ১ অনুসারে মামলা প্রত্যাহার করলে পরে আবার মামলা করতে পারবে এবং ধরে নেওয়া হবে যে আগে মামলা করা হয় নি।

বিধি, ৩; পক্ষগনের চুক্তি বা মিমাংমাসার ভিত্তিতে কোন দাবি পূর্ন বা আংশিক ভাবে মিমাংশিত হলে উক্ত আপোষ মিমাংশার উপর ভিত্তি করে আদালত ডিক্রি প্রদান করবে।

  • কিন্তু আদালত কোন কারনে ডিক্রি প্রদানে অস্বিকৃতি জানালে (আদেশের মাধ্যমে)  সে বিষয়ে আপিল করা যাবে।
  • তবে আপোষ নিষ্পত্তির কোন ডিক্রি দিলে আপিল চলবে না । (ধারা ৯৬(৩))

আদেশ ২৬, বিধি ৯ এবং ধারা, ৭৫ কমিশন নিয়োগ

অনেক সময় আদালতের অনেক বিষয় জানা বা নির্ধারণ করার প্রয়োজন পরে কিন্তু এমন অনেক বিষয় থাকে যা শুধু আদালতে বসে বিবেচনা করা বা সমাধান করা সম্ভব হয় না তখন আদালত সাহায্যকারী হিসেবে তার প্রতিনিধিকে বিভিন্ন বিষয় বোঝা ও কাজ করার জন্য প্রেরণ করেন এই যাকে পাঠান তাকে কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করেন। 

কি কি কারনে কমিশনার নিয়োগ করতে পারবে।  [ধারা, ৭৫**]

  1. কোন ব্যাক্তিকে পরীক্ষা করার জন্য।
  2. স্থানীয় অনুসন্ধান করার জন্য।
  3. হিসেব নিকাস বোঝার জন্য।
  4. ভাগ বাটোয়ারা করার জন্য।

আদেশ ২৬

সাক্ষিকে পরীক্ষার জন্য কমিশন নিয়োগ

বিধি ১:  আদালতের এখতিয়ার সীমার মধ্যে;

  •  সাক্ষি অসুস্থ থাকলে বা
  • কোন কারনে আদালতে আসা হতে অব্যহতি প্রাপ্ত হলে
  • তার পরীক্ষার (এখানে সাক্ষ্য গ্রহণ অর্থে)  জন্য আদালত কমিশন নিয়োগ করতে পারে।

কমিশন নিয়োগ কেন ও কখন

বিধি ২: 

  • আদালত নিজ থেকে প্রয়োজন মনে করলে বা
  • কোন পক্ষ এফিডেভিট সহ কমিশন নিয়োগের জন্য আবেদন করলে।
    • বা কোন সাক্ষি আবেদন করলে।

কমিশন নিয়োগ কেন

বিধি ৪: 

  • আদালতের সীমানার বাইরে থাকলে
  • এলাকা ছেড়ে যাওয়ার উপক্রম হলে
  • রাষ্ট্রিয় চাকরি করলে

স্থানীয় তদন্তের জন্য কমিশন নিয়োগ  [For local investigation]

বিধি ৯: বিরোধের বিষয় পরীক্ষা করে বোঝার জন্য

  • ৩ মাসের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট করবে

যেসব বিষয় তদন্ত করতে :

  • ক) বাজার দর
  • খ) অন্তবীকালনি মুনাফা
  • গ) ক্ষতিপূরনের টাকা – Compensation
  • ঘ) বাৎসরিক প্রকৃত মুনাফা
  • ঙ) সুদ

ইত্যাদি।

আমাদের আপডেটেড নোট, গাইড, ভিডিও টিউটোরিয়াল পেতে এবং আইন বিষয়ক বিভিন্ন  ট্রেনিং, কোচিং, কোর্স কিনতে আমাদের  আইন পাঠশালা ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ২০২৩ সালের বার কাউন্সিল MCQ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে আগ্রহী হলে দ্রুত আইন পাঠশালা ফেসবুক গ্রুপ এ সংযুক্ত হোন।

ল হেল্প বিডি আইনের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাধারণ ভাবে আইন নিয়ে আলোচনা করে। আইনের আশ্রয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একজন আইনজীবীর পর্যাপ্ত গবেষণা ও কৌশল প্রয়োগ করেন যার ফলে তা সাধারণ আইনের ব্যতিক্রম হতে পারে, আমাদের লেখা এবং সাধারণ সাহায্য কোন আইনজীবীর বিকল্প নয়। প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের সেবা নিতে চাইলে ফর্ম, ই-মেইল lawhelpbd@gmail.com বা ফেসবুকের ম্যসেঞ্জারের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

Rayhanul Islam

অ্যাডভোকেট রায়হানুল ইসলাম ল হেল্প বিডির প্রধান লেখক ও সম্পাদক। তার আইন পেশার পাশাপাশি তিনি আইনকে সহযে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তথ্য ও প্রযুক্তি, মনোবিজ্ঞান এবং দর্শনে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। প্রয়োজনে: rayhan@lawhelpbd.com more at lawhelpbd.com/rayhanul-islam

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: দু:খিত এই লেখাটির মেধাসত্ত্ব সংরক্ষিত !!